কামাল আহমেদ মজুমদার ( জন্ম ৩ মার্চ ১৯৫০ ) ফেনী জেলার পরশুমার উপজেলার ভারতের সীমান্তবর্তী নিজকালিকাপুর গ্রামে এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্ম তার। পিতা মরহুম আলহাজ্ব মাওলানা নুর মোস্তফা মজুমদার এবং মাতা মরহুমা আলহাজ্ব দেলবাহার বেগম। মাওলানা নূর মোস্তফা মজুমদার ছিলেন উপমহাদেশের একজন বিশিষ্ট আলেম।
নিজকালিকাপুর প্রাইমারি স্কুল থেকে কামাল আহমেদ মজুমদারের শিক্ষা জীবন শুরু হয়। তিনি পরশুরাম পাইলট হাইস্কুল থেকে এসএসসি এবং রাজধানীর ঢাকা সলিমুল্লা কলেজ থেকে এইচএসসি ও ডিগ্রী পাশ করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যয়নকালীন রাজনৈতিক হয়রানির জন্য কারাগারে থাকায় রাষ্ট্রবিজ্ঞানে মাস্টার্স ফাইনাল পরীক্ষা এবং আইন বিষয়ে দ্বিতীয় পাঠ পরীক্ষায় অংশ নিতে পারেননি। বিভিন্ন সময় রাজনৈতিক হয়রানির শিকার হয়ে পাঁচ বছরেরও অধিক সময় কারাগারে ছিলেন। জনাব কামাল আহমেদ মজুমদার একদিকে যেমন ছিলেন মেধাবী ছাত্র অন্যদিকে ছাত্র জীবনে ছিলেন তুখোড় ছাত্র নেতা।
আলহাজ্ব কামাল আহমেদ মজুমদার
“পরিবার”
পিতা : মৃত আলহাজ্ব মাওলানা নুর মোস্তফা মজুমদার।
মাতা : মৃত আলহাজ্ব দেলবাহার বেগম।
আলহাজ্ব কামাল আহমেদ মজুমদার
স্ত্রী : মিসেস সাহিদা কামাল
বড় পুত্র : মরহুম আলহাজ্ব জিয়াউদ্দিন আহমেদ মজুমদার
ছোট পুত্র : শাহেদ আহমেদ মজুমদার
বড় কন্যা : রাশেদা আক্তার রত্না
ছোট কন্যা : সায়েরা আক্তার মজুমদার
“ব্যক্তিগত অর্জন”
তৈরি পোশাক রপ্তানীর ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ রাষ্ট্রপতি কর্তৃক ২ বার জাতীয় পদক অর্জন করেন এবং সর্বোচ্চ রপ্তানিকারক ও একাধারে ৫ বার সিআইপি নির্বাচিত হন। তিনি মুক্তিযুদ্ধ ও সমাজ সেবায় অবদানের জন্য বুদ্ধিজীবী ফোরামের পক্ষ থেকে জাতীয় স্বর্ণপদকে ভূষিত হন। বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব বিজনেস অ্যান্ড টেকনোলজি এবং কমার্স কমার্স কলেজ কর্তৃক গোল্ড মেডেল প্রাপ্তি। এমনকি দক্ষিণ কোরিয়া থেকে সর্বোচ্চ রপ্তানিকারক হিসেবে জনাব আলহাজ্ব কামাল আহমেদ মজুমদারকে “Seoul Golden key” প্রদান করা হয়। এছাড়াও ব্যক্তিগত জীবনে তিনি তার কর্মের মাধ্যমে অনেক সম্মাননা অর্জন করেছেন যা আমাদের দেশ এবং দেশের মানুষের জন্য অত্যন্ত গৌরবের।
পেশায় ব্যবসায়ী কামাল আহমেদ মজুমদার। রাজনীতির সঙ্গে সক্রিয় ভাবে যুক্ত আছেন ছাত্র জীবন থেকে। তিনি সলিমুল্লাহ কলেজের ছাত্রসংসদের নির্বাচিত জিএস ও ভিপি ছিলেন। তিনি ঢাকা মহানগর ছাত্রলীগের তিন বার সভাপতি এবং একই সাথে কেন্দ্রীয় কমিটির সাংস্কৃতিক সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। ছাত্ররাজনীতি শেষে তিনি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িত হন এবং ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি ছিলেন। বর্তমানে তিনি ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের প্রধান উপদেষ্টা। তিনি একজন বিশিষ্ট শিল্প উদ্যোক্তা, গার্মেন্টস ইন্ডাস্ট্রির অন্যতম পথিকৃৎ, শিক্ষানুরাগী, ক্রীড়া সংগঠক ও লেখক। তিনি মোহনা টেলিভিশন লিমিটেড এবং এস. এস. এগ্রো কমপ্লেক্স লিমিটেডের চেয়ারম্যান। তিনি চতুর্থবারের মতো সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। এবং বর্তমান সরকারের শিল্প ও প্রতিমন্ত্রী হিসেবে নিযুক্ত। বিশিষ্ট ব্যবসায়ী কামাল আহমেদ মজুমদার বাংলাদেশের তৈরি পোশাক শিল্পের একজন পাইওনিয়ার।
তিনি বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী শ্রেষ্ঠ বিদ্যাপীঠ মনিপুর উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজের প্রতিষ্ঠাতা ও গভর্নিং বডির সাবেক সভাপতি। তিনি ঢাকার মিরপুরে অবস্থিত সরকারি বঙ্গবন্ধু কলেজ, শেখ ফজিলাতুন্নেছা ইসলামিক মহিলা ডিগ্রি কলেজ, বঙ্গবন্ধু বিদ্যানিকেতন, কামাল আহমেদ মজুমদার স্কুল এন্ড কলেজ, দেলবাহার প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ আরও অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠাতা।
এছাড়া মিরপুর উদয়ন স্কুল, জান্নাত একাডেমি হাইস্কুল, আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়, কাজীপাড়া ছিদ্দীকিয়া ফাজিল মাদ্রাসাসহ মিরপুরের বহু শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সংস্কার, সম্প্রসারণ ও আধুনিকায়নে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন। শিক্ষার প্রতি কতটা ভালোবাসা থাকলে একজন মানুষ এতগুলো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে ভালোবেসে তাদের মাথার উপর ছায়া হয়ে থাকতে পারেন তা আমাদের ভাবতে বাধ্য করে। তিনি চলন্তিকা ক্রীড়াচক্রেরও প্রতিষ্ঠাতা। জনাব কামাল আহমেদ মজুমদার জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু ভ্রাম্যমাণ হাসপাতালের প্রতিষ্ঠাতা। তিনি বাংলাদেশ অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ও এশিয়ান অ্যাথলেটিক ফেডারেশনের সদস্য। তিনি বাংলাদেশ অ্যামেচার অ্যাথলেটিক্স ফেডারেশনের সভাপতি এবং সার্ক অ্যাথলেটিক্স ফেডারেশনের সহ-সভাপতি ছিলেন।
সবার কাছে গ্রহণযোগ্য কামাল আহমেদ মজুমদার বাংলা একাডেমি, বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি, বাংলাদেশ অন্ধ কল্যাণ সমিতি এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে রেজিস্টার্ড গ্রাজুয়েটের আজীবন সদস্য। এছাড়াও বঙ্গবন্ধু কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক সিনেট সদস্য।
সর্বস্তরের মানুষের প্রতি তার অদম্য ভালবাসা। কামাল আহমেদ মজুমদার আদ্যোপান্ত একজন মানব দরদি, দানশীল মানুষ। ব্যবসা-বাণিজ্যের মাধ্যমে তিনি যা কিছু উপার্জন করেছেন, তা অন্যান্য ব্যবসায়ী ও শিল্পপতিদের মতো ব্যবসার সম্প্রসারণ, কলকারখানা প্রতিষ্ঠা বা অন্য কোন উপায়ে কুক্ষিগত না করে জনকল্যাণমূলক কাজে বিলিয়েছেন অবলীলায়, অকাতরে। মসজিদ-মাদরাসা ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের উন্নয়নের তার অসামান্য দান অনুদান অতুলনীয়। বস্তুত বৃহত্তর মিরপুরে এমন কোন মসজিদ, মাদ্রাসা,এতিমখানা, স্কুল, কলেজ, ক্লাব,মন্দির, গির্জা এমন কোন প্রতিষ্ঠান নেই যে, সেখানে তার লক্ষ লক্ষ টাকার ব্যক্তিগত অনুদান পৌঁছেনি। এতিম অনাথদের প্রতিপালন, গরিব রোগীর চিকিৎসা, নিঃস্ব মেধাবী ছাত্র-ছাত্রীদের শিক্ষা গ্রস্থ পিতার কন্যার বিয়ের খরচ সহ নানা বিধর সমস্যা নিয়ে প্রতিদিন মানুষ তার কাছে আসছে আর তিনি মুক্ত হস্তে তাদেরকে অবিরাম দান করে চলেছেন। তিনি সর্বসাধারণের কাছে চিকিৎসা সেবা পৌঁছে দেয়ার লক্ষ্যে প্রতিষ্ঠা করেছেন “জাতির জনক বঙ্গবন্ধু ভ্রাম্যমাণ হাসপাতাল “। এই হাসপাতাল প্রতি শুক্রবার স্কুলকলেজ, মাদ্রাসা সহ বিভিন্ন এলাকায় বিনামূল্য ওষুধ প্রদান ও বিশেষজ্ঞ ডাক্তার কর্তৃক চিকিৎসা সেবা প্রদান করে থাকে। পাশাপাশি ১৪ নং সেকশন এ প্রতিষ্ঠা করা হয় হোমিওপ্যাথি দাতব্য চিকিৎসালয়। যখন যেভাবে গরিব,অসহায় মানুষ তার কাছে সাহায্য চেয়েছে, তখন তারা সেভাবেই উপকৃত হয়েছে। বিপদে মানুষ সর্বদা তাকে পাশে পেয়েছে। তার কার্যক্রম এর মাধ্যমে বর্তমানে তাই তিনি গণমানুষের আস্থাভাজন প্রিয় একজন ব্যক্তিত্ব।